ছোটবেলায় স্কুলে থাকতে কতরকম আদেশ-নিষেধই না আমাদের শিখানো হতো ভাল মানুষ হওয়ার জন্য। এমনকি বোর্ডের বইয়ের পেছনের মলাটে লেখা থাকতো কতশতউপদেশ বাণী। পরবর্তী জীবনে আমরা সেসব মেনে চলি আর না চলি, কনশাস কিংবা সাবকনশাস মাইন্ডে কিন্তু এসব উপদেশ কিংবা নিষেধাজ্ঞা ঠিকই থেকে গেছে। আর তাইতো চলার পথে আমরা ভাল-খারাপ ঠিকই বিবেচনা করতে পারি। কিন্তু এসব উপদেশ ছাড়াও পাঠ্যবইয়ে কিছু বাস্তবিক নিষেধাজ্ঞা উল্লেখ থাকার প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই এখন বিভিন্নভাবে কমবেশি টের পাচ্ছি। তা এসব নিষেধাজ্ঞা মেনে চললে অন্যের বিরক্তির যেমন কারণ হতে হয়না, বাংলা গালির অভিধানও সমৃদ্ধ হয়না। এখন জেনে আসা যাক এমন কিছু নিষেধাজ্ঞার কথা যা কিনা পাঠ্যবইয়ে থাকা বাঞ্চনীয়।
১. রাস্তার মাঝখানে হঠাৎ গাড়ি থামিয়ে নবাবের মত নামবেন না
শহরে থাকেন কিন্তু এমন পরিস্থিতির শিকার হননি এটা হতেই পারেনা। প্রায়ই দেখা যায় ব্যস্ত রাস্তার মাঝখানে একজন প্রাইভেট কার থেকে নবাবের বেশে নামছে পিছনে তার গাড়ির জন্য সৃষ্টি হওয়া বিশাল জ্যামকে উপেক্ষা করে। তাদের জন্যই এই নিষেধাজ্ঞা।
২. মানুষের সামনে নাক, কান, দাঁত খোঁচাবেন না
শুধু বয়স্ক আঙ্কেলই না, অনেক কম বয়সী ছেলে মেয়েকেও দেখা যায় নিজের ইমেজ এবং সামনের মানুষটি কি ভাবছে সেদিকে পাত্তা না দিয়ে দিব্যি খোঁচাখুঁচি চালিয়ে যাচ্ছেন। এটি যেমন অস্বাস্থ্যকর তেমনি দেখতেও নোংরা লাগে।
৩. লিফটের বাটন প্রেস করে সুড়সুড় করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাবেন না
আচ্ছা যদি সিঁড়ি দিয়েই ওঠানামা করবেন, তাহলে লিফটের বাটন প্রেস করার দরকারটা কি বলেন তো? এইভাবে মজা না নিয়ে বেঙ্গল বিটসের ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘হিউমর’ সেকশানে যান, অনেক মজা পাবেন। 😉
৪. সকলকে জানান দিয়ে জোরে গান ছাড়বেন না
অনেককেই দেখা যায় আত্মীয়ের বিয়ে কিংবা হলুদের প্রোগ্রাম উপলক্ষে পাড়াপ্রতিবেশীর সমস্যার কথা চিন্তা না করে ছাদে জোরে সাউন্ডবক্সে সারারাত ধরে ‘দিলবার দিলবার’ কিংবা ‘বেবি ডল’ টাইপ হিন্দি গান বাজাতে। তা বলি বিয়েতে দাওয়াত যখন দিবেন না, তখন জোরে গান বাজিয়ে না শুনানোই শ্রেয়।
৫. আপনার মনের কথা ব্যক্ত করতে আপনার ফেসবুক ওয়াল ব্যবহার করুন, পাবলিক প্লেসের দেয়াল নয়
পাবলিক টয়লেট, রাস্তার পাশের দেয়ালকে অনেককেই খাতা মনে করে নিজের মনের কথা সুন্দর করে লিখে ফেলেন। তাদেরকে এই উপদেশ খাতা, কলম দিয়ে ১০০ বার লিখানো এখন সময়ের দাবি।
৬. বই পড়ার স্থান থেকে কবরস্থান পর্যন্ত যেকোন জায়গাকে আপনার ছবি তোলার স্থান বানিয়ে ফেলবেন না
ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামে লাইক, ফলোয়ার বাড়ানোর তালে পড়ে সব জায়গার যে একটা নিজস্ব আবেদন আছে বা সব জায়গায় ছবি তুলতে দাঁড়িয়ে পড়া যে শোভন নয় সেটা অনেক বাঙালি আজ ভুলতে বসেছে। ছোটবেলা থেকে তাদের এই জ্ঞান দিতে পারলে এমন বিপাকে পড়া লাগতো না।
৭. চিৎকার করে দুনিয়া কাঁপিয়ে ফোনে কথা বলবেন না
কিছু মানুষকে ফোনে কথা বলতে শুনলে প্রায়শই মনে প্রশ্ন জাগে ‘গলায় মাইক ফিট করা নাকি?’ এটি যে এক ধরনের অভদ্রতা তা আজ পাঠ্যবইয়ে লেখা না থাকায় অনেকেই জানে বলে মনে হয়না।
৮. বই ধার নিয়ে পড়ার পর ফেরত দিতে ভুলবেন না
বই চুরিকে ঠিক অপরাধ পর্যায়ে গণ্য করা হলে লাখ লাখ মানুষ বোধ হয় আজকে জেলে দিন কাটাতো। ধার করে বই পড়তে নিয়ে অনেকেই পড়ার পর নিজের বই মনে করে ঘরের শেলফে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখে বছরের পর বছর । দয়া করে এমনটি করবেন না।