in , , ,

ভাল্লাগসেভাল্লাগসে

মন খারাপেরা যাক মরে…

“আমার খুব মন খারাপ, খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু পারছি না। আমার মন কি আর কোনোদিনই ভালো হবে না?”

ফেসবুকে প্রায়ই আমরা সবাই এই ধরনের স্ট্যাটাস দেখি। আশেপাশে যেন এখন মন খারাপের সঙ্গীরা বেড়েই চলেছে। এই মন খারাপ এক সময় ভয়ংকর রুপ ধারন করে। একটা সময় এই মন খারাপ আর সহ্য করতে না পেরে অনেকেই নিয়ে ফেলে জীবনের সব চাইতে বড় ভুল সিদ্ধান্ত। আর সেটি হচ্ছে আত্মহত্যা!

আসলে আমরা অনেকেই আমাদের মনের কথা সবাইকে বলতে পারি না। বোঝাতে পারি না আমাদের মনের ভেতরের অস্থিরতাকে। মুখে হয়তো হাসি ফুটে থাকে কিন্তু চোখে থাকে জনম জনমের কষ্ট। সত্যি বলতে মন খারাপ হওয়ার জন্য কোনো কারন লাগে না। অনেকের বৃষ্টি পড়লে মন খারাপ হয়, কারো কোনো গান শুনলে, কোনো মুভি দেখলে, পরীক্ষায় ফল খারাপ হলে মন খারাপ হয়। কিন্তু বেশীর ভাগ মানুষেরই মন খারাপ হয় প্রিয়জনের সঙ্গে ঝগড়া হলে। আর এটাই স্বাভাবিক। ব্যক্তি জীবনে সামাজিক বা ব্যক্তিগত কারনে সৃষ্ট দুঃখবোধ থেকে উৎপত্তি হয় মনখারাপ। ফলে এটি হয়ে যায় হতাশার কারণ। কখনো কখনো এই হতাশার ফলে কেউ কেউ সারাজীবন একাও থেকে যায়, পৃথিবী থেকে তৈরি করে দূরত্ব এমনকি প্রিয়জনদের থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যায়। আসলে নারী পুরুষ নির্বিশেষে যেকোনো বয়সের মানুষই হতাশায় ভুগতে পারে।

এখন কথা হচ্ছে, কীভাবে নিজের মধ্যে থেকে এই হতাশা কাটিয়ে তোলা যায় এবং কেন এই ভয়ঙ্কর ব্যাধি থেকে নিজেকে আগলে রাখা জরুরি।কারণ যারা হতাশায় ভোগে তারা অন্যদের থেকে সবসময়ই ভিন্ন হয়। তাদের কিছু আচরণগত সমস্যা দেখা যায়। হতাশার একদম প্রাথমিক লক্ষন হচ্ছে- ঘুম না আসা, আগে যে কাজ গুলো করতে ভালো লাগতো তা এখন করতে আর ভালো না লাগা, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, যেকোনো মুহূর্তেই রেগে যাওয়া, সারাদিন মৃত্যু নিয়ে চিন্তা করা, এই জগৎ সংসার আর ভালো না লাগা, সৃতি শক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি। অনেক সময় এগুলো দূর করতে আমরা অনেকেই মাদকের আশ্রয় নেই। ফলে এক পর্যায়ে আমরা আসক্ত হয়ে পড়ি কিন্তু তাতে এই সমস্যা কমে না গিয়ে বরং আরও বেশী দেখা যায়। তাই এই মানসিক সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। –

১. বিষণ্ণতা কিংবা মন খারাপ দূর করতে প্রিয়জনদের সাথে সবকিছু শেয়ার করতে হবে। কারন একমাত্র তাদের যত্ন ও গুরুত্বই এমন মুহূর্তে আমাদেরকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারে।

২. মুভি দেখুন বেশী বেশী। গান শুনুন। কিন্তু যে মুভি বা গান শুনলে আপনার মন খারাপ হবে তা অগ্রাহ্য করুন। এক্ষেত্রে মন ভালো হওয়া কিছু মুভির নাম জেনে রাখতে পারেন- Forrest Gump, Pursuit of Happiness, UP, হ্যামলক সোসাইটি, The Hangover, Baby’s Day Out, Finding Nemo, How to Train Your Dragon, Despicable Me সিরিজ ইত্যাদি।

৩. অনেক বেশী মন খারাপ হলে কোথাও ঘুরতে চলে যান। বেশ কিছুদিন ব্যস্ত জীবন থেকে ছুটি নিন। পাহাড় দেখুন, সমুদ্র দেখুন। পাহাড় ও সমুদ্রের বিশালতার কাছে আপনার ছোট্ট জীবনের দুঃখকষ্ট গুলো জমা দিয়ে আসুন।

৪. পরিবারের সাথে বেশী বেশী সময় কাটান। চেষ্টা করুন পারিবারিক অনুষ্ঠান গুলোতে যোগ দিতে। পরিবারের সাথে হাসি খুশি থাকুন। বিকেলে ছাঁদে গিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিন। আকাশটাও দেখে নিন দিনে একবার হলেও। বিশাল আকারের কাছে আপনার মনখারাপ নিতান্তই ক্ষুদ্র মনে হবে।

৫. ধর্ম পালন করুন। এটির চাইতে বড় ওষুধ আর কিচ্ছু হতে পারে না। নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন। আজ আপনি পিছিয়ে আছেন কালকে আপনি এগিয়ে যাবেন। নিজেকে দায়িত্ববান হিসেবে গড়ে তুলুন। রাতে জলদি ঘুমিয়ে পড়ুন। সকালে জলদি ঘুম থেকে উঠে ভোর দেখুন। কীভাবে সূর্যাস্ত হয়, কীভাবে সূর্যোদয় হয় দেখুন। একবার ভাবুন, এতো সুন্দর জীবন কি আসলেই আমাদের মন খারাপ করার জন্য? ভাই! এক জীবনে যদি স্রষ্টার সৃষ্টিগুলো উপভোগই না করলেন তাহলে আর কি করলেন?

নিজেকে বলতে থাকুন, মন খারাপেরা এইবার যাক মরে। যাক, যাক মরে।

What do you think?

Written by Zahan Musrat

I refuse to sink!

Leave a Reply

আমরা ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বাংলায় ট্রান্সলেট করার দুঃসাহস দেখিয়েছি আর ফলাফল নিজেই দেখুন।

পুরান ঢাকার সাকরাইন: যে উৎসব ঐতিহ্যের, যে উৎসব আনন্দের