আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা সিনেমা দেখতে খুব পছন্দ করেন। আর তাই সুযোগ পেলেই আয়োজন করে স্ক্রিনের সামনে বসে পড়েন সিনেমা উপভোগ করার জন্য। নিজেকে এমন সিনেমার দুনিয়ায় হারিয়ে নিতে যাদের অনেক বেশি ভালো লাগে, তাদের জন্যই ক্লাসিক বাংলা সিনেমা নিয়ে আমাদের আজকের এই ছোট্ট তালিকাটি!
#১ ঘুড্ডি
৮০র দশকের বানানো হলেও ঘুড্ডি নিঃসন্দেহে একটি অনবদ্য বাংলা সিনেমা। সিনেমাটিতে সুবর্ণা মোস্তফা এবং রাইসুল ইসলাম আসাদের অভিনয় আপনার মন জয় করবেই। এবং সাথে আছে অসাধারণ স্ক্রিপ্টিং। লাকি আখন্দের “আবার এলো যে সন্ধ্যা” অথবা “কে বাঁশি বজায় রে” গানগুলো নিশ্চই বহুবার শুনেছেন, এই গানগুলো কিন্তু এই সিনেমারই! তাই এখনো না দেখে থাকলে অবশ্যই দেখে ফেলুন!
#২ ময়নামতি
নায়করাজ রাজ্জাক ও কবরী অভিনীত সত্তরের দশকের ব্যাপক আলোচিত ছবি ‘ময়নামতি’। আমাদের বাবা-মা থেকে শুরু করে অনেকেরই বড় পর্দায় দেখা প্রথম ছবি এটি। বড় পর্দায় মুক্তির পর এই সিনেমাটি এতটাই দুষ্প্রাপ্র্য হয়ে উঠেছিল যে, এর প্রিন্ট তো দূরের কথা কোনো পোস্টার কিংবা ফটোসেটও কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ব্যাপক জনপ্রিয়তা এবং দর্শকদের সেই স্বর্ণালী দিনের স্মৃতির স্মারক হয়ে থাকলেও এই সিনেমাটি প্রায় দুষ্প্রাপ্য হতে চলেছিল। তবে মুক্তির ৫০ বছর পর চ্যানেল আই সিনেমাটির রিল উদ্ধার করে সেটি HD আবারো দর্শকদের কাছে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়। আপনিও চাইলে এখনই প্রায় হারিয়ে যাওয়া এই অসাধারণ সিনেমাটি দেখে নিতে পারেন।
#৩ সীমানা পেরিয়ে
১৯৭৭ সালে বানানো এই সিনেমাটি এখনকার যেকোন রোমান্টিক গল্পের উপর বানানো সিনেমাকে হার মানায়। ১৯৭০ সালে উপকূলীয় অঞ্চলে এক ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিচালক ছবিটি নির্মাণ করেছেন। ছবিতে মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বুলবুল আহমেদ ও জয়শ্রী কবির। “বিমূর্ত এই রাত্রি আমার মৌনতার সুতোয় বোনা একটি রঙিন চাদর” এবং “মেঘ থম থম করে” এই জনপ্রিয় সঙ্গীত দুটো এই চলচ্চিত্রের গান। চলচ্চিত্রটি ১৯৭৭ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-এ শ্রেষ্ঠ অভিনেতাসহ মোট তিনটি বিভাগে পুরস্কার লাভ করেছিল। এছাড়াও ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউট-এর “বাংলাদেশের সেরা ১০ চলচ্চিত্র” তালিকায় স্থান পেয়েছে “সীমানা পেরিয়ে”।
#৪ দহন
একজন বেকার যুবকের ঢাকা শহরে টিকে থাকার সংগ্রামের গল্প নিয়ে এই সিনেমাটি। পরিবার প্রতি দায়িত্ব, সততা টিকিয়ে রাখার রাখার লড়াই এবং ভালোবাসার কাছে অসহায়ত্ব, এর প্রতিটিই হুমায়ন ফরীদি অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তুলছেন। এই সিনেমায় আরো অভিনয় করেছেন বুলবুল আহমেদ, আসাদুজ্জামান নূর এবং ববিতা। চলুন সিনেমাটি দেখে আসি।
#৫ নীল আকাশের নিচে
১৯৬৯ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পূর্বকালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশী চলচ্চিত্র। তৎকালীন বাঙালি পরিবারের গল্পই ছবিটির প্রধান উপজীব্য বিষয়। সময়ের উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায় গল্পের কাহিনী, সমাজের উচ্চ এবং মধ্যবিত্তের ভেতর তৈরি হওয়া ভালোবাসা আর হাসি কান্নার গল্প। ছবিতে প্রধান দুইটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন নায়করাজ রাজ্জাক ও কবরী। এই ছবির “নীল আকাশের নিচে আমি রাস্তা চলেছি একা” অথবা “হেসে খেলে জীবনটা যদি চলে যায়” গানগুলো আজও আমাদের হৃদয়ে গেঁথে আছে। তাই অবসর সময় এই ক্লাসিক ছবিতে দেখে নিতে ভুলবেন না।