ফেসবুক ফ্যান পেজগুলো অনেকদিন ধরেই মাঠে নেমেছে টপ ফ্যান সংগ্রহ মিশনে। অনেকটা এংগেজম্যান্ট রিং নিয়ে ধাওয়া করার মতো করে টপ ফ্যান ব্যাজ হাতে নিয়ে ছুটছে ফেসবুক সমাজের নোটিফিকেশনে নোটিফিকেশনে। সম্প্রতি ফেসবুক পেজগুলোর এহেন চরিত্রহীন আচরণে ফেসবুকের যুবক-যুবতিরা নিজেদের চরিত্র নিয়েও পড়েছেন বেশ সংকটে। টপ ফ্যান ব্যাজের নোটিফিকেশন দেখা মাত্রই চরিত্র হারানোর ভয়ে মূর্ছা যাচ্ছেন অনেকে। কেউ কেউ ভয়ে নোটিফিকেশন দেখছেন না। কেউ কেউ ফেসবুকে আসার চিন্তাও বাদ দিয়ে দিচ্ছেন।
এমনই এক চরিত্র হারানোর শঙ্কায় ভুক্তভোগী ক্যারেক্টার কাশেম বলেন, “ভাই কী আর কমু কন। খুবই আতঙ্কে আছি। গতকাল নায়লা নাঈম কইলো হের টপ ফ্যান হইতে। আইজ দেহি সানাই মাহবুব কইতাছে হের টপ ফ্যান হইতে। চরিত্র ক্যামনে ঠিক রাখুম কন। ধৈর্যের বাঁধতো ভাইঙ্গা যাইতাছে। আমার যদি চরিত্র নষ্ট হইয়াই যায়, এর জন্য কিন্তু আমি দায়ী না!” এরপর ক্যারেক্টার কাশেম উদাস হয়ে সামনের দিকে হাটা দেয়।
অন্য এক যুবক চরিত্রবান সোলাইমান জানান, “টপ ফ্যানের জ্বালায় গার্লফ্রেন্ডের লগে ব্রেকাপ হওয়ার পথে ভাই। পরশু ডেটিং-এর সময় পার্কে বইসা প্রেমিকার হাতে হাত রাইখা কইছি, এই দুনিয়ায় হে ছাড়া কেউ নাই আমার, আমি হের টপ ফ্যান আমিই ফলোয়ার। এমন সময় হুট কইরা পূর্নিমা টপ ফ্যান রিকোয়েস্ট পাঠালো! ফোন তখন প্রেমিকার হাতে। বোঝেন অবস্থা! প্রেমিকারে ক্যামনে বুঝাই আমি চরিত্রবান। চরিত্রে সমস্যা পূর্নিমা পেজের অ্যাডমিনের।” এসময় সোলাইমানকে বুক চাপড়ে চাপড়ে ‘বিধি তুমি বলে দাও আমি কার’ গান গাইতে শোনা যায়।
এদিকে বিবাহ বিচ্ছেদের খবরও পাওয়া যাচ্ছে কোথাও কোথাও। সদ্য ডিভোর্সড এক আসল পুরুষ আমাদের জানান, “মাঝরাতে প্রেমিকার লগে রোমান্টিক সময় কাটাইতেছিলাম ভাই। বৃহস্পতিবার রাত, বৃষ্টিও আছিলো। এমন সময় জয়া আহসানের টপ ফ্যান রিকোয়েস্ট। মোবাইল কাঁইপা উঠায় ফোন হাতে নিয়ে দেখি এই অবস্থা। লগে লগে বউ উইঠা বাপের বাড়ি চইলা গেছে। আর কইয়া গেছে, জয়া আহসানের লগে থাকতে। এখন আমি কি করি কন, বউ নাই! জয়া কি আসবো!!? তাইলে হেয় আমারে টপ ফ্যান রিকোয়েস্ট পাঠাইলো ক্যান?”
শুধু পুরুষ না! টপ ফ্যান ব্যাজের শঙ্কায় আছেন ফেসবুক নারীসমাজও। সিয়াম, হিরো আলম, কান হেলাল, সালমান খান, কিয়ানু রিভস, লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও সহ সারা বিশ্বের সব সুপুরুষদের টপ ফ্যান ব্যাজ রিকোয়েস্ট পেয়ে স্বামী সংসার ও প্রেম টিকাতে পারছেন না অনেকে। হয় স্বামী ভুল বুঝতেছে, না হয় সে ভুল বুঝে নিজেকে ফেমাস মনে করে স্বামি বা প্রেমিককে ছেড়ে রওয়ানা দিচ্ছে টপ ফ্যান ব্যাজ পাঠানো সেলিব্রেটির বাড়ির উদ্দেশ্যে।
তাই ফেসবুক সমাজ নিজেদের প্রেম ও সংসার টেকাতে জাকারকবার্গের কাছে এর একটা আশু সমাধান চেয়েছেন।
বিঃদ্রঃ পীথাগোরাস একদা বলেছিলেন – “ইন্টারনেটে প্রচলিত ৯৯.৯৯% জিনিসই ভুয়া” সুতরাং যেখানে যা দেখেন তা যদি বিশ্বাস করার অভ্যাস/বদভ্যাস আপনার থেকেই থাকে তাহলে তার দায়ভার সম্পূর্ণ আপনার।