রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া পেঁয়াজ তার আসল মালিককে ফিরিয়ে দিয়ে মানবিকতার এক অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আজিমপুরের জাফরি নামের এক যুবক। জানা যায়, গতকাল বিকেলে তিনি মিরপুর রোডে ধুলা খেতে বের হয়েছিলেন। ধুলা খেতে খেতে এক পর্যায়ে তার চোখে পড়ে ব্যাগটি। পরে ব্যাগ খুলে তিনি দেখেন ২ কেজি পেঁয়াজ। কিন্তু ভাগ্যক্রমে ব্যাগের গায়ে নাম ঠিকানা ছিল, তা দেখে ব্যাগের মালিককে ফোন দিয়ে পেঁয়াজের ব্যাগ ফেরত দিতে গেলে ব্যাগের মালিক আবেগে আপ্লুত হয়ে যান। আবেগে আপ্লুত হয়ে তাকে ঢেলে চা খাইয়েছেন বলেও জানা যায়। এতগুলো পেঁয়াজ পেয়েও কিভাবে নিজের লোভ সংবরণ করলেন, এ ব্যাপারে জাফরিকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “ভাই লোভে পাপ, পাপে পল্টি। আমি কোনদিন পল্টি নেওয়া শিখিনি, আর এখন পেঁয়াজের মত দামি জিনিস কেউ হারালে, যার হারাবে সে তো একদম পথে বসে যাবে। একজন মানুষ হয়ে কিভাবে আমি আরেকজন মানুষকে পথে বসাই বলেন? তাই ব্যাগটা পাওয়ার সাথে সাথেই ঠিকানা দেখে আমার মনে হয় এর প্রকৃত মালিককে ফেরত দেয়া উচিত। তবে পেঁয়াজের বদলে শাক-সবজি থাকলে অবশ্য কি করতাম জানিনা, শাক-সবজি মানে তো বুঝছেনই”– বলেই চোখ টিপ মারেন জাফরি। জাফরির চোখ টিপ মারা দেখে আমাদের প্রতিবেদক ভয়ে পালিয়ে আসেন।
এদিকে পেঁয়াজের মালিক পেয়ার ভাইকে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি আবেগে কেঁদে দেন। আধাঘন্টা কান্নাকাটি করে তারপর কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আমাদের বলেন, “ভাই মানবিকতা মরে যায়নি, জাফরি ভাইয়ের মত মানুষরা আছে বলেই মানুষ এখনো মানুষকে বিশ্বাস করে। আমি তো পেঁয়াজের ব্যাগ হারিয়ে পাগলের মত হয়ে গিয়েছিলাম। এই দুর্মূল্যের বাজারে আবার আরেক কেজি পেঁয়াজ কিনতে হবে, ভেবেই আমার পায়ের ঘাম মাথায় উঠে যাচ্ছিলো। এরপর জাফরি ভাই যখন ফোন দিয়ে সত্যি সত্যি আমার বাসায় আসলেন, আমি যা দেখলাম রাসেল ভাই নিজের চোখকেও বিশ্বাস করাতে কষ্ট হচ্ছিলো। দেখি সত্যি সত্যি আমার হারিয়ে যাওয়া পেঁয়াজ জাফরি ভাইয়ের হাতের ব্যাগটায়”।
অন্যদিকে আজিমপুরের জাফরির এই মহানুভবতায় সোস্যাল মিডিয়াতে তাকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন সবাই। অনেকে ম্যারি মি জাফরি হাশট্যাগ দিয়ে লাইভে এসে কান্নাকাটি করছেন বলেও জানা যায়।
বিঃদ্রঃ পীথাগোরাস একদা বলেছিলেন – “ইন্টারনেটে প্রচলিত ৯৯.৯৯% জিনিসই ভুয়া” সুতরাং যেখানে যা দেখেন তা যদি বিশ্বাস করার অভ্যাস/বদভ্যাস আপনার থেকেই থাকে তাহলে তার দায়ভার সম্পূর্ণ আপনার।