in

মাইরালামাইরালা ভাল্লাগসেভাল্লাগসে কস্কি মমিনকস্কি মমিন সেন্টি খাইলামসেন্টি খাইলাম

প্রতি ঈদে নাটকের নামে প্রচারিত ভাঁড়ামি, ন্যাকামি ও জগাখিচুড়ী মার্কা নাটকের শ্রেণীবিভাগ

প্রতি ঈদেই টেলিভিশন অনুষ্ঠানমালায় ঈদের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত নাটক একটা বিশেষ অবস্থান দখল করে থাকে। প্রতি চ্যানেলেই ঈদের পর কয়েকদিনে নাটক মোটামুটি সেঞ্চুরী ছাড়িয়ে যায়। নাটক নির্মাতা দেখান নিজেদের মুন্সিয়ানা। কীভাবে গল্প ছাড়াই তৈরি করে ফেলা যায় একটা আস্ত গার্বেজ থুক্কু নাটক সেটা আমাদের দেশীয় নির্মাতাদের কাছ থেকে শিখতে পারে আন্তর্জাতিক মানের নির্মাতারাও। তাই গত কয়েক বছর ঈদের নাটক দেখে প্রচুর হেসে-কেঁদে এবার ঈদের আগেই ঈদের নাটকের সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিতে আমরা হাজির হয়েছি।

#১

এই ধরনের নাটক হালকা থেকে মাঝারি বা কখনো কখনো ভারী রকমের হাস্যরসাত্মক ধরনের হয়ে থাকলেও রসের চেয়ে হাসির পরিমানটাই বেশি পাওয়া যায়। এই ধরনের নাটক টুকটাক সারাবছরই হয়ে থাকে। তবে ঈদে একটু বেশি হয়। দৃশ্যপট মূলত গ্রাম অথবা পুরান ঢাকা হয়ে থাকে এবং সাথে কিছু আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার দেখা যায়। সাধারণত এই ধরণের নাটকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আখম হাসান, মীর সাব্বির, কালো করে খাটো ওই ভাইয়াটা, ক্যামনে কইরা জানি কথা কয় যে ওই মেয়েটা, রাস্তা, চিপা গলি, পুকুর পাড় ইত্যাদিকে অভিনয় করতে দেখা যায়।

#২

এই ঘরানার নাটক আগাগোড়া পুরাটাই হাসি আর হাসি। নাটকের গল্প খুব ভারী না হলেও হাসির ধাক্কায় নাটকের ওজন অনেক গুণ বেড়ে যায়। প্রতি ঈদে ধারাবাহিক আকারে দেখানো হয়। আবার কখনো কখনো এক ঈদে পর পর সাতদিন সাতপর্ব দেখানো হয়ে থাকে। বাংলাদেশের টেলিভিশন জগতে এই ঘরানার নাটকই প্রথম সিক্যুয়েল সংস্কৃতির প্রচলন ঘটায়। এই ধরনের নাটকে নির্দিষ্ট কোন ভাষা নেই। দেশের সকল অঞ্চলের ভাষার প্রতি সম্মান দেখিয়ে সব আঞ্চলিক ভাষার সংমিশ্রনে একটা নতুন ভাষা দিয়েই এই ধরনের নাটক নিরব বিপ্লব ঘটিয়ে যাচ্ছেন। মূলত আগে অনেক ভালো অভিনয় করতো ওই ভাইয়াটি, তার অদ্ভুত ফ্যাশন ও অদ্ভুত ভাষা, বক্স নাকি বাকস, ফইন্নিরপুত, লাল শার্ট সহ আর অনেক গুণি অভিনেতাকে এই ঘরানায় নাটকে অভিনয় করতে দেখা যায়।

#৩

এই ধরনের নাটকে কখন কে কার কিভাবে প্রেমে পড়ছে, কখন প্রেম হচ্ছে, কখন ব্রেকাপ হচ্ছে, কখন কে মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে বোঝা মুশকিল। এইসব ইমোশনাল থ্রিলার দেখতে বসার আগে চোখের পানি মোছার জন্য আপনাকে হাতের কাছে কয়েক প্যাকেট টিস্যু বক্স নিয়ে বসতে হবে। এই ধরনের নাটক শুদ্ধ আধুনিক বাংলা ভাষার হয়ে থাকে। দৃশ্যপট বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নতুন ঢাকার দুজন মানব মানবির প্রেম সংক্রান্ত হয়। বড়ছেলে খ্যাত ওই লেইম ভাইয়াটি, সবসময় ভাবে থাকা সতেজ ভাইয়াটি, পাগলাটে ধরণের মুখ ভর্তি দাড়িওয়ালা ছেলেটি ও হাসি, কান্না, রাগ, ক্ষোভে একই এক্সপ্রেশন শো করা ওই আপুটিই এই ধরণের নাটকের মূল চরিত্রে থাকে।

#৪

দেশি, বিদেশি পাঁচমিনিট দৈর্ঘ্যের মিউজিক্যাল ফিল্মকে উপজীব্য করেই এই ধরনের নাটকের কাহিনী আগাতে থাকে। টুকটাক সারাবছরই এই ধরনের নাটক প্রচার হয় কিন্তু ঈদে কাটতি বেশি থাকে। পাঁচ মিনিটের গল্পকে টেনে চল্লিশ মিনিট করার মতো মুন্সিগিরি দেখিয়ে থাকেন এই ধরানার নির্মাতারা। গাড় বাংলা, ইংরেজি, স্পেনিশ, পুরান ঢাকার ভাষা দিয়ে মিশ্রন ঘটিয়ে জগাখিচুড়ী টাইপ সুন্দর এক ভাষার ব্যবহার দেখা পাওয়া যায় এই ধরনের নাটকে। অভিনয়ে মুলত নতুন মুখদের দেখা যায়। কখনো কখনো ঢাকার প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির মেধাবী তরুন-তরুনী কিংবা ইউটিউব থেকে উঠে আসা প্রতিভাদেরও দেখা যায়। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি, গাড়ি, গ্যারেজ, রোড ট্রিপ, ইংবাংলিশ ভাষা ইত্যাদি এই ধরণের নাটকে অভিনয় করে থাকেন।

আপনি কোন ধরনের নাটক দেখতে চান আমার কাছে যদি এই পরামর্শ চান তাহলে বলবো এই চার ঘরানার নাটক ছাড়া বাকিগুলো দেখুন। যদিও এই চার ঘরানার নাটকই বেশি অস্কার (পড়ুন বলাৎকার) পাওয়ার যোগ্য, তারপরও দেখতে বলছিনা কারণ এইসব নাটক দেখে আপনারা আমাদের উপর রাগ করে আমাদের সাইটে আসা বন্ধ করে দিতে পারেন। আমাদের কাছে আপনাদের বিনোদনের চেয়ে আমাদের সাইটে আসা অনেক বেশি গুরুত্বপুর্ণ।

What do you think?

Written by Nazmul Haque

যিনি স্বপ্ন দেখেন, ফুলটাইম হাসার আর অবসরে বাঁচার।

Leave a Reply

সালামি দেওয়ার ভয়ে আকাশের দিকে পা তুলে ঈদ কাটালেন ময়মনসিংহের নাসির মিয়া

ঈদের ছুটিতে রাস্তাঘাট বেশি ফাঁকা দেখে ডিপ্রেশনে ভুগছেন মিরপুরের এক বাসিন্দা