in

ভাল্লাগসেভাল্লাগসে মাইরালামাইরালা কস্কি মমিনকস্কি মমিন

ব্রেস্ট ক্যান্সার সচেতনতার মাসে চলুন নিজেরাও একটু সচেতন হই

নিজের বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে আমরা কতই না সচেতন থাকি, মুখে পিম্পল উঠলো কি-না, সানবার্ন হল কি-না, চুল পড়ে যাচ্ছে কি-না, নানারকম প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার থেকে শুরু করে, কত কিছুই না করি বাহ্যিক সৌন্দর্য মেইনটেন করতে, অথচ নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে কেন যেন আমরা ভীষণ উদাসীন। কিন্তু শুধু একটু সচেতনতার মাধ্যমে ব্রেস্ট ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগকেও দমন করা সম্ভব, কারণ প্রাথমিক স্টেজে সনাক্ত করতে পারলে এই রোগ নিরাময়ের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। ব্রেস্টে লাম্প আছে কি-না সেটা বোঝার জন্য রকেট সায়েন্টিস্ট হওয়া লাগে না, দরকার শুধু নিজের প্রতি কিছুটা মনোযোগ।

বাংলাদেশের নারীরা যেসব ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, ব্রেস্ট ক্যান্সার তার শীর্ষে রয়েছে। এই ক্যান্সারে কিন্তু পুরুষরাও আক্রান্ত হতে পারেন, যদিও তুলনামূলকভাবে হার অনেক কম। তবে প্রতি ৮ জন নারীর মধ্যে একজন নারীর ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, চিন্তা করে দেখুন এই তথ্যটি কতটা ভয়াবহ! কিন্তু আমরা কি সেই পরিমাণ অ্যাটেনশন এই ব্যাপারটাতে দেই? সামাজিক রক্ষণশীলতার কারণে অনেক নারীরা ‘স্তন’ শব্দটি উচ্চারণ পর্যন্ত করতে চান না, শরীরে প্রাথমিক কোনো লক্ষণ দেখা গেলেও তারা গোপন রাখেন, যে কারণে বেশিরভাগ রোগী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন একদম লাস্ট স্টেজে গিয়ে, নিজের প্রতি অবহেলার কারণে তখন হয়তো অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই ভয়-ভীতি এবং অহেতুক লজ্জাকে উপেক্ষা করে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে আমাদেরকেই।

অক্টোবর মাসটি স্তন ক্যান্সার সচেতনতার মাস হিসাবে পালন করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, স্তন ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণের ভিত্তি হলো ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকরণ।

এই লক্ষণগুলো সম্পর্কে সচেতন হন (Breast Cancer Warning Signs) –

– স্তন এবং আন্ডারআর্মের চারপাশে পিণ্ড তৈরি হওয়া।
– স্তনের ভিতরে ও চারপাশে ফোলাভাব।
– স্তনের আকার ও আকৃতির পরিবর্তন।
– স্তনের চারপাশের ত্বকে পরিবর্তন।
– স্তনের আকৃতির পরিবর্তন।
– স্তনে কালো বা বাদামী দাগ।

এই ধরণের সমস্যাগুলো ফেইস না করলেও এবং অন্য কোনো ধরনের সমস্যা খেয়াল করলেও সাথে সাথে চেকআপ করা উচিত। নিয়মিত নিজেকে পরীক্ষা করা এবং ব্রেস্টে কোনরকম অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করলেই দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, সেই সাথে বছরে অন্তত একবার ব্রেস্ট চেকআপ করানোও খুব দরকার।

আমাদের প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তের উপর জোর দিতে হবে। এ ব্যাপারে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার প্রয়োজনও রয়েছে। কেননা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত সচেতনতা তৈরিতে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করতে পারে। স্তন ক্যান্সারের প্রতিরোধ, প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য এগুলো জরুরি।

বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ১৯ জনের বেশি নারী ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণে মৃত্যুবরণ করছেন, যা বছরে দাঁড়ায় সাড়ে সাত হাজারেরও বেশি। এই রোগের ভয়াবহতার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে সাধারণ মানুষের অসচেতনতা এবং জড়তা, কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা গেলে সহজেই এই গ্লানি মুছে দেয়া সম্ভব। ১৮ অক্টোবর গোলাপি রং পরে পালন করা হয় ‘পিংক দিবস’, যেন যারা এখনো এই ব্যাপারে অজ্ঞাত এবং অসচেতন, তাদের দৃষ্টি কাড়া যায়! ব্রেস্ট ক্যান্সারের বিরুদ্ধে নিজে সচেতন হওয়া এবং অন্যদেরও সচেতন করাটা আসলেই খুব বেশি জরুরি।

What do you think?

Written by Maisha Farah Oishi

জীবনটা আসলে হিজিবিজি হিজিবিজি

Leave a Reply

ফ্রেন্ডদের কাছে যে মিথ্যাগুলো শুনে আমরা সবাই অভ্যস্ত