গত কয়েকদিন যাবৎ সারাদেশেই গরমের প্রকোপ বেড়েছে ভয়াবহ রকমের। আর ঢাকার গরম বেড়েছে তার চেয়েও কয়েকগুন বেশি হারে। অ্যাভেঞ্জার এন্ডগেম, বেটল অফ উইন্টারফেল, ঢাকা ওয়াসা, বাংলাদেশের দলের জার্সি নিয়মিত গরমের সাথে যুক্ত হয়েছে এই সকল গরমও। সব মিলিয়ে ঢাকার কিছু এলাকায় ঘামের সাগর বয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কোথাও কোথাও সেই সাগরে সামুদ্রিক মাছ চাষের কথাও শোনা গেছে। যদিও আমাদের রিপোর্টাররা এই খবরকে রিউমার বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। কারণ গবেষণা বলছে- ঢাকার মানুষের ঘামের সাগরে মাছের মতো ক্ষুদ্র জলজ প্রাণীতো দূরের কথা, জ্বলজ জ্বীন, ভূত, পেত্নিও গ্যাসে মরে যাবে। এরা কারা? যারা এইসব রিউমার ছড়ায়? -একটু উত্তেজিত হয়ে যাওয়ায় আমাদের রিপোর্টার ততক্ষণে ঘেমে জুবুথুবু হয়ে গিয়েছেন।
গরমে যখন ঢাকার মানুষের এমন নাকাল অবস্থা ঠিক তখনই আমরা খবর পাই ঢাকার রহস্যময়তায় ভরপুর মিরপুরে নাকি তিনদিন ধরে তুষারপাত হচ্ছে। মিরপুরের কাল্পনিক আমজনতা সরকার ইতিমধ্যে মিরপুরকে গরীবের সাইবেরিয়াও ঘোষণা করে বসে আছেন। এমন খবর শোনার সাথে সাথে বেঙ্গল বিটসের অফিসে হৃদয় শীতল করা ঠান্ডা বাতাস বয়ে গেছে। ঠান্ডা বাতাস খেতে খেতে এই খবরের সত্যতা যাচাই করতে রিপোর্টার পাঠাবেন কি না তা চিন্তা করার আগেই অফিসের সব রিপোর্টার উধাও। সত্যতা যাচাইয়ের উছিলায় মিরপুর থেকে ঘুরে আসার আশা নিয়ে বসের অনুমতি ছাড়াই সবাই মিরপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দিছেন ইতিমধ্যে।
কিন্তু রাস্তায় নেমেই সটাং করে অবাক হওয়ার পালা। চলো চলো মিরপুর চলো স্লোগানে মিরপুর অভিমুখে লাখো মানুষের ভীড়। কিন্তু দমে যাননি আমাদের রিপোর্টাররা। এই মানব জোয়ার ঠেলেঠুলে এগিয়ে গিয়েছেন একটু তুষার ছোঁয়ার আশায়। সরি, খবরের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অনেক কষ্টে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আবার অন্যের ঘাম গায়ে নিয়ে মিরপুরের সৈনিক ক্লাব সীমান্তে যাওয়ার পর তুষারের জন্য আর রাস্তা খুঁজে না পাওয়ায় আমাদের রিপোর্টাররা ফিরে আসতে বাধ্য হয়।
মিরপুরের যেতে ব্যর্থ হলেও খবরের সত্যতা যাচাই করার জন্য আমরা ভাইরাল হওয়া ছবিটি নিয়ে গবেষণায় বসি। সরাসরি সাইবেরিয়া থেকে আসা আমাদের তুষার গবেষক দল লাখ চেষ্টার পরও ছবিটিতে কোন ধরণের তুষারের অস্তিত্ব খুঁজে পাননি। তাহলে সাদা সাদা তুষারের মতো এইসব কী এই ছবিতে? আকাশে বাতাসে যখন এই প্রশ্ন প্রতিধ্বনিত হচ্ছিলো ঠিক তখনই আমাদের এক রিপোর্টার ছবির সাদা সাদা কনাগুলোকে মিরপুরের ধুলাবালি বলে মত প্রকাশ করেন। মত প্রকাশ করার পরই অফিসে হো হো করে হাসির জোয়ার বসে যায়। আমাদের সেই রিপোর্টারকে “গরমের ইয়েতে পাগল” আখ্যা দিয়েই আমরা খবর পাঠিয়েছি উত্তরবঙ্গের সেই শীতের ইয়ে বিশেষজ্ঞ চাচাকে। তিনি এসে মিরপুরে তুষারপাতের সত্যতা খুঁজে পাবেন বলে আমাদের বিশ্বাস!
বিঃদ্রঃ পীথাগোরাস একদা বলেছিলেন – “ইন্টারনেটে প্রচলিত ৯৯.৯৯% জিনিসই ভুয়া” সুতরাং যেখানে যা দেখেন তা যদি বিশ্বাস করার অভ্যাস/বদভ্যাস আপনার থেকেই থাকে তাহলে তার দায়ভার সম্পূর্ণ আপনার।