বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের কাছে খুবই জনপ্রিয় ভিডিও অ্যাপ টিকটক। কারণ টিকটকে ভিডিও বানিয়ে এখন আর কষ্ট করে সেলিব্রেটি খেতাব অর্জন করতে হয় না, ঘরে বসেই ম্যাগি নুডুলস রান্না করার চেয়েও দ্রুত সময়ে মাত্র দেড় মিনিটেই সেলিব্রেটি হয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু হঠাৎ করেই টিকটক বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়ায় হতাশায় ভেঙে পড়েছে অনেকেই। টিকটক না থাকলে কিভাবে নিজেদের ট্যালেন্ট সারা দুনিয়ার সামনে তুলে ধরবে এই নিয়ে চিন্তিত তারা। কেউ কেউ দাবি তুলেছেন এই নির্দেশনা না তুলে নিলে আগামী ঈদের পরই দেশ জুড়ে তীব্র আন্দোলন শুরু করা হবে।
এমনকি রাজধানীর লিটন আবাসিক এলাকার এক কিশোরী এই খবর শুনে হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্নহত্যার চেষ্টাও করেছেন। কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ ঘুমের ঔষধ সেবন করায় তেমন আশংকা জনক অবস্থার সৃস্টি হয় নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই কিশোরীর মামা আবে সালামের সাথে যোগাযোগ করায় সে জানায়, “টিকটকে ভিডিও বানানোর পর থেকে আমার ভাগনির জীবন পাল্টে যায়। তাকে আগে কেউ চিনতোও না, সেই ভাগনির এখন ৪২০ হাজার ফলোয়ার! তাই পাড়ায় হাটতে বের হলে মামা হিসেবে আমিও এক্সট্রা খাতির পাই। শুধুমাত্র টিকটকের কল্যানে আমিও এখন সেলিব্রেটির মামা! কিন্তু টিকটক বন্ধ হয়ে গেলে আমার ভাগনির অভিনয় এর ক্যারিয়ারও শেষ হয়ে যাবে। তার হাজার হাজার ফলোয়ারদেরও হারাব। তখন কোথায় পাব আমি এত মানুষের অ্যাটেনশন? এসব ভেবেই আবেগাপ্লুত হয়ে সে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবং তার সিদ্ধান্তে সমর্থন জানিয়ে আমিই তাকে ওই ঔষধগুলো কিনে এনে দিয়েছিলাম।”
অন্যদিকে টিকটক এসোসিয়েশনের সভাপতি দিলদার জানিয়েছেন যে, “এই নির্দেশনা উঠিয়ে না নেয়া পর্যন্ত আমাদের সদস্যরা অনশন চালিয়ে যাবে। যদি এরপরও আমাদের দাবি না মানা হয় তাহলে আমরা আরও কঠিন কর্মসূচি নিয়ে হাজির হবো।” তিনি আরও বলেন- “আমাদের অনেক তরুণ শরীরে অস্ত্রপ্রচার করিয়ে তরুণী হয়ে যাওয়ার জন্যে ভারতে আছেন। অনেকেরই এখনো অস্ত্রপ্রচার মাঝপথে আছে। অন্তত তাদের কথা বিবেচনায় নিয়ে হলেও এই পাশবিক নির্দেশনা উঠিয়ে নেয়া উচিত।”
তার কাছে আমরা আরো জানতে পারি, টিকটক বন্ধ হওয়ার খবরে এরকম অনেকেই নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে শংকার মধ্যে আছে। আবার অনেক টিকটক ব্যবহারকারীদের মতে, তাদের মত প্রতিভা অন্যদের নেই বলেই হিংসায় বন্ধ করা হচ্ছে এই অ্যাপটি এবং এর ফলে প্রচুর মাল্টি ট্যালেন্ট হারাতে বসেছে দেশ! সারাদিন ভিডিও বানিয়ে যাদের দিন কাটত তারা এখন কিভাবে মানুষকে বিভিন্ন অঙভঙি দেখিয়ে লাইক আর ফলোয়ার কামাবে ভেবেই পাচ্ছেনা! হাজার হাজার ছেলে মেয়ের সেলিব্রিটি হওয়ার স্বপ্ন এখন ভাঙনের পথে। দেশের এই ক্রান্তিকালে কি হবে পরবর্তীতে তা-ই এখন দেখার বিষয়।
বিঃদ্রঃ পীথাগোরাস একদা বলেছিলেন – “ইন্টারনেটে প্রচলিত ৯৯.৯৯% জিনিসই ভুয়া” সুতরাং যেখানে যা দেখেন তা যদি বিশ্বাস করার অভ্যাস/বদভ্যাস আপনার থেকেই থাকে তাহলে তার দায়ভার সম্পূর্ণ আপনার।