সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কানাডা পর্যন্ত যাওয়ার একটি গুপ্ত সুড়ঙ্গ আবিষ্কৃত হয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের জাবি প্রতিনিধি বিস্তারিত জানতে গেলে সেখানে গিয়ে জানতে পারেন যে গতকাল এক প্রেমিক যুগল একটু নিরিবিলি সময় কাটাতে রাস্তার পাশে ঝোপের ধারে দাঁড়িয়ে নিজেদের বিবাহ নিয়ে কথা কাটাকাটি করার এক পর্যায়ে মেয়েটি ছেলেটিকে ধাক্কা দিলে সে একটি গর্তে পড়ে যায়। তখন তার চিৎকার শুনে পার্শ্ববর্তী মাঠে খেলাধুলারত কতিপয় ছেলে সাহায্য করতে এগিয়ে এলে দিপু নাম্বার টু স্টাইলে একজনের চোখে সুড়ঙ্গটি ধরা পড়ে এবং এর পরেই বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। সবাই গর্তে পড়ে যাওয়া ছেলেটিকে ভুলে গিয়ে সুড়ঙ্গ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে ঘটনার পরপরই ঐ সুড়ঙ্গ এলাকার আশপাশে গত কয়েকদিন দেখা গেছে এমন সন্দেহভাজন একজনকে আটক করার পরই বের হয়ে আসে থলের বিড়াল। আটককৃতদের মধ্যে একজন ফ্রেশ সবজির এনে দেয়ার শর্তে বলেন “ভাই কয়েকদিন যাবৎ শাকসবজি খেতে পারছি না, খুব খরা যাচ্ছে। শুনলাম কানাডায় নাকি শাকসবজির বাম্পার ফলন এবং ঐখানে পিওর শাকসবজি বেচাকেনা এক্কেবারে বৈধ। তাই ৫ সদস্যের টিম মিলে ভাবলাম সুড়ঙ্গ খুড়ে কানাডা গিয়ে কিছু সবজি নিয়ে আসি।” কিন্তু হঠাৎ এত কঠিন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানতে চাইলে দলের এই নবীন সদস্য জানান- “ভাই, এ ব্যাপারে আমাদের অনুপ্রেরণা ছিলো “দ্য শশাঙ্ক রিডেম্পশন” মুভির টিম রবিন্স ভাই। মুভিতে উনার খোড়াখুড়ির স্টাইল দেখে আমরা ব্যাপক অনুপ্রাণিত হয়েছি। তাই গত তিন মাসের খোড়াখুড়ির ফসল এই সুড়ঙ্গ। তবে আমার কপালটা খারাপ। বাকি ৪ বড়ভাই সুড়ঙ্গপথে কানাডা চলে গেছে, আর আসে নাই। আমি টায়ার্ড থাকায় একটু ঘুম দিসিলাম হিসাব ছিলোনা। ধরা খেয়ে গেলাম। আমার কি হবে?” এই বলে উনি সবজি সবজি করে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এ ব্যাপারে কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন বিবারকে ফোন দেওয়া হলে তিনি বলেন- “আরে বাহ! দারুণ খবর তো। খোব নাইস লাগসা কথাটা শুনে। সুড়ঙ্গ খোড়াখুড়ি একটা শিল্প। আদিমকাল থেকেই এই শিল্পের চর্চা হয়ে আসছে। আমি আমাদের জাহাঙ্গীরনগরের ভাইদের আহ্বান জানাবো কানাডা আসার পর তারা যেন আমার সাথে দেখা করে। কথা দিলাম, আমি তাদের জন্য পর্যাপ্ত ওরফে বৈধ ওরফে ফ্রেশ শাকসবজির ব্যবস্থা করবো!”
এদিকে জাহাঙ্গীরনগর থেকে কানাডা পর্যন্ত সুড়ঙ্গের কথা শুনে হাজার হাজার সবজি প্রেমীরা বস্তা, পিকআপ ভ্যান, ট্রাক, বেলচা সহ ক্যাম্পাসে এসে ভিড় করছে। অন্যদিকে সুড়ঙ্গ পথে কানাডা যাওয়ার পথ আবিষ্কারের কথা শুনে বাংলাদেশের কানাডিয়ান হাই কমিশন তাদের কাজ গুটিয়ে নেয়ার কথা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে কানাডিয়ান কনস্যুলেট জানান- “আমাদের তো আর কোনো ঝামেলা নাই, এখন তো অফিসে বসে আমাদেরকে মাছি মারতে হবে। তাই অযথা বাড়তি খরচ না করে আমরা দেশে চলে যাচ্ছি”। একইসাথে তিনি সুড়ঙ্গ পথ আবিস্কারক দলকে এক টুইট বার্তায় অভিনন্দন জানিয়েছেন।
কানাডিয়ান সুড়ঙ্গের সামনে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকা একজন অতি উৎসাহী বলেন- “ভাই, তিনদিন ধুইরা দাড়ায়ে আছি! চিন্তা করছি আগামী ১০ বছরের জন্য সবজি নিয়ে আসুম! এই লাইনে আমার অনেক পরিচিত মানুষজন আছে! এরা যে সবজি প্রেমী তা আমি এতদিন জানতাম না! কি আশ্চর্য! যাক ভালোই হলো!”
এই ব্যাপারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা না প্রকাশ না করার শর্তে জানান- “আসলে আমরা এমন কাজ দেখে অত্যন্ত গর্বিত। এই পোলাপান আমাদের দেশের রত্ন! এদেরকে সবজিপ্রেমী জাতি আজীবন মনে রাখবে। ধন্যবাদ! আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন!”
বিঃদ্রঃ পীথাগোরাস একদা বলেছিলেন – “ইন্টারনেটে প্রচলিত ৯৯.৯৯% জিনিসই ভুয়া” সুতরাং যেখানে যা দেখেন তা যদি বিশ্বাস করার অভ্যাস/বদভ্যাস আপনার থেকেই থাকে তাহলে তার দায়ভার সম্পূর্ণ আপনার।