ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত, অখ্যাত, কাঙ্ক্ষিত, অনুষ্ঠিত (এবং বর্জিত) ডাকসু নির্বাচনে জয়ীদেরকে উত্তর কোরিয়ার গণতন্ত্রের নেতা, জনগণের নেতা, প্রাণের নেতা, সংগ্রামী নেতা এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট হৈলদা ট্রাম্পের বন্ধু জনাব ডিম জং উন সরাসরি নিজ টেবিলের নিচে লুকিয়ে রাখা বাটন প্রেস করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তার অভিনন্দন বার্তায় (বাটনের গুঁতায়) তিনি এমন সুষ্ঠু নির্বাচন ইতিহাসে সাক্ষী হয়ে থাকবে বলেও উল্লেখ করেন। আমাদের ‘বিশেষ কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিনিধি’ জনাব ডিম্ জং উনের প্রেস সচিব ট্যংড়া মুনের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- “গতকাল আমাদের নিজেদের দ্যাশেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েসে, যেখানে সবাই অইত্যন্ত আনন্দের ছাথে ভোট প্রদান করেছেন, যা বিশ্ব মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচারিতও হইয়েছে আপনারা দেখেছেন। আমাদের নির্বাচনে সবচেয়ে রহইস্যময় ব্যাপার ছিল যে, প্রতিটি আসনে একজন সরকার দলীয় প্রতিনিধির বিপক্ষে অদৃশ্য প্রতিপক্ষ ছেলেন, যাদের সাংবাদিকরা খুঁজে পাননি বলে ছবিও তুইলতে পারেননি, নইলে আপনারা উনাদেরকেও হয়তো দেইখতে পেতেন। তবে যাই হোক, ডাকসু নির্বাচন কিন্তু আমাদের থেকেও বেশি রহস্যময়। কারণ প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত হিসাব করে আমরা দেখেছি যে, এই নির্বাচনে ব্যালট বাক্সের খরচ বাঁচাতে একদিকে যেমন বস্তা ব্যবহৃত হয়েছে, তেমনি জাদুমন্ত্র দিয়ে ব্যালট পেপার পাশের রুমে লুকিয়ে রাখা হয়েছে এবং ভোটার ছাড়াই ব্যালট বাক্স ভইরে গিয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে যা বিরল হয়ে থাকবে” উনার সাক্ষাতকার চলাকালীন সময়ে হঠাৎ করেই ডিম জং উন পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের প্রতিনিধিকে দেখে দাঁড়িয়ে যান। এ পর্যায়ে তিনি এসে বলেন- “আরে ভাই, আমিতো সহমত বাংলাদেশে যাওয়ার জন্যে রেডি হৈতেছিলাম সহমত। উনারদেরকে সহমত অভিনন্দন জানানোর পর উনারা আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সহমত। ভাবতেছি যে ওখানে গিয়ে সহমত আমি উনাদের কাছ থেকে কিছু শিক্ষা-দীক্ষা নিয়ে আসবো সহমত।”
উনার কথায় কথায় সহমত শুনে আমাদের প্রতিনিধি ঘাবড়ে গেলে উনাকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে উনি বলেন- “আমিতো এতদিন এসব জানতামই না সহমত, বাংলাদেশ থেকে ফিরেই সহমত আমি আমার দেশে এই স্লোগান চালু করবো সহমত এবং সবাইকে ফেসবুকে বাধ্যতামূলক এই কমেন্ট করার জন্য একটি আইন পাশ করবো সহমত! হে হে! তাই একটু প্র্যাকটিস করতেছি আর কি!” তবে টেবিলের নিচে লুকিয়ে রাখা বাটনের কথা মনে করিয়ে দিলে তিনি বলেন- “দেখেন ভাই! ওখানে সহমত আমার দুইটা বাটন আছে। একটাতে চিপ দিলে দুনিয়া উড়ে যাবে। আর আরেকটাতে সহমত দিলে অভিনন্দন চলে যাবে। হেহে! আইডিয়াটা অনেক ক্রিয়েটিভ না? আমিতো একবার ভাবছিলাম সহমত নিজেকে ক্রিয়েটিভ প্রমান করার জন্যে ঐ যে ইন্ডিয়ার পাইলট অভিনন্দনকেই ধরে এনে উপহার হিসেবে সহমত বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিবো! কিন্তু ইবনে সিনা হসপিটালের অযথা বাড়তি খরচ করার সহমত বিজ্ঞাপন মনে পড়ে যাওয়াতে আর করি নাই! সহমত অল্পতে কাম সেড়ে নিলাম! যাই ভাই, অনেক কথা হলো সহমত! আমাকে রেডি হতে হবে!”
কিন্তু এদিকে জয়ী কমিটির সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান – “ভাই রে ভাই! সহমত ভাই! এতো বিজয় উদযাপন করতে করতে আমরা ক্লান্ত। তাই আমরা এবারের বিজয় উদযাপনে মিষ্টির পরিবর্তে ডিম দিব। শুধুমাত্র আমাদের নেতা ডিম জং উনকে সম্মান প্রদর্শনের জন্যই এমন পরিকল্পনা।” তবে এই বিশেষ ডিম সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনদিক দিয়ে দিবে, তা নিয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেননি।
বিঃদ্রঃ পীথাগোরাস একদা বলেছিলেন – “ইন্টারনেটে প্রচলিত ৯৯.৯৯% জিনিসই ভুয়া” সুতরাং যেখানে যা দেখেন তা যদি বিশ্বাস করার অভ্যাস/বদভ্যাস আপনার থেকেই থাকে তাহলে তার দায়ভার সম্পূর্ণ আপনার।