সম্প্রতি নাসা তাদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে যে প্রচন্ড সহ্যশক্তির অধিকারী হওয়ার কারনে এখন থেকে শুধুমাত্র ঢাকার বাসিন্দা হলেই যে কেউ হতে পারবে নভোচারী। এ সংবাদ প্রকাশের পর সমগ্র ঢাকাবাসীর মনে বয়ে যাচ্ছে আনন্দের জোয়ার। এখন শুধু আর প্লেন নয় ঢাকাবাসী চাইলে রকেটের জানলা দিয়ে বের হয়ে ফাঙ্খা দিয়ে নামার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।
এ প্রসঙ্গে জানার জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক সংবাদদাতা যিনি কিনা বর্তমানে মেক্সিকোতে ছিলেন, তারপরও অনেক কষ্টে আমেরিকান-মেক্সিকান বর্ডারের দেয়াল টপকে আমেরিকায় প্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়েন এবং পরবর্তীতে আমেরিকান বর্ডার পুলিশকে দুশো টাকা ঘুষ দিয়ে নাসা সদর দপ্তরে গিয়ে নাসা মহাসচিবকে জিজ্ঞেস করেন কেনো তারা বিশ্বের অন্য সব বড় শহরের বাসিন্দা ছেড়ে ঢাকাবাসীকেই বেছে নিলেন,
তখন নাসা মহাসচিব বলেন- “আমরা বিগত কয়েক বছরের গবেষণার পর যেসব তথ্য উপাত্ত পেয়েছি তা থেকে দেখা যায় ঢাকাবাসী ডাইনোসরের চেয়ে কোনো অংশে কম না, এদের সহ্যশক্তির ধারে কাছে ইউনাইটেড স্টেটস অব নোয়াখালীর মানুষরাও কিছু নয়। মশার কামড় ঢাকাবাসীর জন্য দুধভাত উল্টো কোনদিন মশাকেই এরা কামড়ে দেয় আমরা সেটা নিয়েই চিন্তিত।
এই বিশেষ ক্ষমতা তাদেরকে অন্যান্য গ্রহের নাম না জানা প্রাণীদের থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করবে, এছাড়া তীব্র জলাবদ্ধতায় থাকতে থাকতে আস্তে আস্তে এরা উভচর প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়েছে। ধুলাবালির কারনে ঢাকার পরিবেশ আর মঙ্গল গ্রহের পরিবেশে এখন খুব একটা ফারাক নেই তাই এরা সেখানেও খুব সহজেই টিকে থাকতে পারবে। এমনকি মঙ্গল যেকোনো উত্তাল সমুদ্রেও এদেরকে কেউ ঠেকাতে পারবেনা।
অন্যদিকে ভেজাল খাবার খেয়ে খেয়ে এদের পাকস্থলি এখন সবচেয়ে শক্তিশালী, যেকোনো জিনিস এরা হজম করতে প্রস্তুত। এছাড়া প্রতিদিন জ্যাম ঠেলে কাজকর্ম করতে করতে ঢাকাবাসীর ধৈর্যশক্তির এমন উন্নতি হয়েছে যে, মহাকাশের দূরদূরান্তের গ্রহ নক্ষত্রের দীর্ঘ যাত্রা এদের কাছে কিছুই না। তার উপর ঐদিন দেখলাম আমি সম্প্রতি এক খবরে দেখলাম যে ঢাকাবাসীর প্লেনের জানলা দিয়ে বের হওয়ার এক অদ্ভুত ক্ষমতা আছে এবং এ ধরনের ক্ষমতা থাকা মানব ইতিহাসে বিরল ঘটনা। তাই আশাবাদী অন্য গ্রহে কোন ঢাকাবাসীকে পাঠানো হলে আমাদের কষ্ট করে নভোযান নামানোর ঝামেলা করতেই হবে না, বরং এরা সহজেই জানলা দিয়ে বের হয়ে ফাঙ্খা থেকে লাফ দিয়ে ভাসতে ভাসতে নেমে যেতে পারবে।”
তবে এসব ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের সবাই নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিছু বলতে চাইলে আমাদের প্রতিনিধি তাদের বক্তব্য নেয়নি। কিন্তু তিনি ঢাকার উত্তরের মেয়রের কাছে এ ব্যাপারে ফোন দিলে তিনি বাথরুমে আছেন জানিয়ে আধাঘন্টা পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। তখন দক্ষিনের মেয়রকে ফোন দিলে তিনি আমাদের আগে জিজ্ঞেস করেন তার ছবি আমাদের প্ত্রিকায় ছাপা হবে কিনা জানতে চাইলে আমাদের সংবাদদাতা তাকে আশ্বস্ত করেন হ্যা ছাপা হবে তখন তিনি কথা বলতে রাজি হন। উনাকে ঢাকাবাসীর অভূতপূর্ব এই অর্জনকে তিনি কিভাবে দেখেন জানতে চাইলে তিনি বলেন – “দেখুন এ অর্জন আমাদের সকলের, কাধে কাধ মিলিয়ে নিয়ম কানুন না মানার জন্যই আজ আমরা এমন এক বিরল অর্জনের অধিকারী। ঢাকাকে পুরোপুরি ধুলাবালিতে ঢেকে ফেলার জন্যই আজ বিশ্বের বুকে আমরা শুধু জন্মসুত্রেই নাসায় আসা যাওয়ার সুযোগ পেলাম। সমগ্র ঢাকাবাসীর প্রতি রইলো আমার প্রাণ ঢালা অভিনন্দন। আমি আশা করছি, খুব শীঘ্রই আমরা আরও অনেক কিছু অর্জন করতে সক্ষম হবো. আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আর ভাই আমার নীল ব্যাকগ্রাউন্ডের ছবিটা ছাপায়েন, ঐখানে আমারে একটু ফর্সা দেখা যায়। এই ছবিতো ভাই ইতিহাস হয়ে থাকবে, বোঝেন নাই ব্যাপারটা?”
বিঃদ্রঃ পীথাগোরাস একদা বলেছিলেন – “ইন্টারনেটে প্রচলিত ৯৯.৯৯% জিনিসই ভুয়া” সুতরাং যেখানে যা দেখেন তা যদি বিশ্বাস করার অভ্যাস/বদভ্যাস আপনার থেকেই থাকে তাহলে তার দায়ভার সম্পূর্ণ আপনার।