ভ্রমণ করার পাশাপাশি ফেসবুকের দেয়ালে স্বর্ণাক্ষরে ভ্রমণের স্মৃতি সেঁটে রাখা ভ্রমণের অন্যতম পূর্বশর্ত। ভ্রমণে কোথায় গিয়েছেন? কী অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন! এসবের চেয়ে ফেসবুকে ভ্রমণের ধুলা রাখা গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য ভ্রমণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিল থেকে তাল সবকিছুই ফেসবুকে জানিয়ে দেয়া একটা রানিং ট্রেন্ড! আর বেঙ্গল বিটস সবসময় ট্রেন্ডের সাথেই থাকতে পছন্দ করে, পছন্দ করে পাঠকদের ট্রেন্ডের সাথে রাখতেও। তাই ভ্রমণের সময় ট্রেন্ডে থাকার জন্য ফেসবুকে কেমন পোস্ট দিবেন তাই জেনে নিন বেঙ্গল বিটস থেকে।
#১ চলে যাচ্ছি নেটওয়ার্কের বাইরে পোস্ট
ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বের হয়েই প্রথমে “চলে যাচ্ছি নেটওয়ার্কের বাইরে” লিখে একটা পোস্ট করতে হবে। পোস্টের সাথে অবশ্যই ছবি দিবেন। আপনি লোকাল বাসে যেতেই পারেন কিন্তু ছবি অবশ্যই গ্রিনলাইন ডাবল ডেকারের সামনে দাঁড়িয়ে তুলতে হবে। খেলা হবে ভাব নিয়ে একটা ভি সাইন ওয়ালা ছবিও তুলতে পারেন। তবে গার্লফ্রেন্ড, বয়ফ্রেন্ড বা জাস্টফ্রেন্ডকে সাথে নিয়ে গেলে ছবি আপলোড না করাই উত্তম।
#২ শুভসকাল পোস্ট
শুভ সকাল পোস্ট মাস্ট। মেক্সিমাম ভ্রমণের যাত্রা শুরু হয় রাতে। ভ্রমণের নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছাতে সকাল হয়ে যায়, কিংবা সকাল না হলেও দুপুর। সকাল, দুপুর, বিকেল যাই হোক না কেন, ফেসবুকে চেকইন সহ ভ্রমণের স্থানকে শুভসকাল জানিয়ে পোস্ট না দিয়ে ভুল করা যাবে না। সম্ভব হলে দলবলে একটা ছবিও দেয়া যেতে পারে কিংবা ওই স্থানের যেকোন একটা প্রাকৃতিক ছবিও দেয়া যেতে পারে।
#৩ হোটেলের নামফলকের সাথে সেলফি
ভ্রমণের স্থানের যে নামিদামি হোটেলটাতে আপনি থাকবেন তার নামফলকের সাথে সেলফি তুলে পোস্ট না করলে ভ্রমণের ছয় আনাই বৃথা। আপনি ছাড়পোকা ওয়ালা হোটেলে থাকতেই পারেন, কিংবা হোটেলে না থেকেও রাত কাটাতে পারেন কিন্তু ওই এলাকার সবচেয়ে দামি হোটেলের সাথে সেলফি ও চেকইন দিতেই হবে। মনে রাখবেন, সেলফি তুলতে ভালো ফ্রন্ট ক্যামেরা জরুরি, হোটেলে থাকা নয়! আর ভালো ফ্রন্ট ক্যামেরা না থাকলে ভ্রাম্যমাণ ফটোগ্রাফার দিয়ে তুলে নিবেন!
#৪ ঐতিহ্যবাহী খাবারের পোস্ট
প্রতিটা ঐতিহ্যবাহী স্থানের থাকে ঐতিহ্যবাহী খাবার। ভ্রমণে গেলে ওইসব খাবার খান বা না খান খাবারের সাথে সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করা অত্যাবশ্যক। খাবার যত অখাদ্যই হোক না কেনো, ইয়াম্মি ভাব নিয়ে ছবি তুলবেন! সেই ছবি ফেসবুকে আপলোড দিয়ে, আপনার লিস্টের বন্ধুদের “আরেহ! আমি কয়দিন আগেই গিয়েছি, খাবারটা আসলেই ইয়াম্মি” এই জাতীয় কমেন্টের রিপ্লাই দিন! কেউ কেউ এই খাবারকে ইয়াম্মি বলার জন্য গালিও দিতে পারে! এর জন্যও প্রস্তুত থাকুন। এক্ষেত্রে নিজে কেনার মতো পর্যাপ্ত টাকা না থাকলে, খাচ্ছে এমন কাউকে অনুরোধ করে তাদের খাবারের সাথে একটা সেলফি তুলতে পারেন। এক্ষেত্রে কোন মেয়েদের গ্রুপকে অনুরোধ করা নিরাপদ হবে। কারণ খাওয়ার সময় ডিস্টার্ব করার জন্য ছেলেরা আপনাকে মাইরও দিতে পারে।
#৫ ফেসবুক লাইভ
এতকিছু করার পরও আপনি যে ঘুরতে যাচ্ছেন এটা কেউ কেউ বিশ্বাস নাও করতে পারে। সেজন্য ভ্রমণের স্থানে গিয়ে লাইভে আসুন। ভ্রমণের স্থানের ঐতহ্যবাহী কিছু জায়গায় গিয়ে লাইভে না আসলে ভ্রমণের আরো ৬ আনা ব্যর্থ। ভ্রমণের স্থান লাইভ দেখানোর পাশাপাশি নিজেকেও একটু আধটু দেখাতে পারেন। চাইলে লাইভে এসে চুলও ঠিক করে নিতে পারেন। খেয়াল রাখতে হবে যেন ভ্রমণের স্থানের পাশাপাশি আপনাকেও সমহারে দেখা যায়। আর জাস্টফ্রেন্ড নিয়ে গেলে লাইভ থেকে তাকে নিরাপদ দূরত্বে রাখুন।
#৬ সমাপনী স্ট্যাটাস
ভ্রমণ শেষ করে ফেরার দিনই মূলত সমাপনী স্ট্যাটাস দিতে হয়। এইদিন ভ্রমনের স্থানকে বিদায় জানিয়ে পোস্ট করা ও আবার আসতে চান মর্মে পোস্ট করা আবশ্যক। সাথে কিছু আবেগ মাখানো লেখা দেয়া যেতে পারে। ছবি আপলোডতো দিতেই হবে। টুকটাক কবিতা লিখতে পারলে দু-এক লাইন দেয়া যেতে পারে। আপনার মেমোরিতে এই স্মৃতি কতঘন্টা থাকবে তা না ভেবে “কোটি বছর মনে রাখার মতো কিছু দিন কাটালাম” লিখে একটা পোস্ট দিয়ে দিন।
#১ বোনাস পরামর্শ
ফটোশপ নিনজা টেকনিক এই প্রযুক্তি আর ফটোশপের যুগে এসে ফেসবুকে ভ্রমণের পোস্ট দেয়ার জন্য ভ্রমনে যাওয়া আবশ্যক নয়! গুগলে যান, পছন্দ মতো ছবি আপলোড করুন। এরপর ফটোশপ করতে বসে যান। আর উপরের নির্দেশনা অনুযায়ী ছবিগুলোকে এভাবে এডিট করে চলে যান নেটওয়ার্কের বাইরে। কখনো নিউইয়র্কে, কখনো বালীতে, কখনো চাঁদে, কখনো মঙ্গলে, কখনো নাসার হাবলে!
#২ বোনাস পরামর্শ
ভ্রমনের সময় তোলা ছবিগুলো সংরক্ষন করে নিয়মিত বিরতিতে ফেসবুকে আপলোড করে ফ্রেন্ডলিস্টের সবাইকে জ্বালাতে ভুলবেন না!