via GIPHY
ব্রেকিং ব্যাড- নামতো শুনেছেন নিশ্চয়ই! শুনেন নি? না শুনে থাকলে কিন্তু বিরাট মিস! আচ্ছা তাও না শুনলে আমি বলছি, শুনুন। ভিন্স গিলিগেনের ব্রেকিং ব্যাডকে আমেরিকেন টেলিভিশান সিরিজের দ্বিতীয় সোনালি যুগের একটি ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়। এই সিরিজে প্রধান চরিত্রটি প্রথমে একদম একটি সাদামাটা জীবনযাপন করলেও পরবর্তীতে প্রয়োজনের খাতিরে হয়ে উঠে এক কুখ্যাত ড্রাগ ডিলার। সবসময় প্রধান চরিত্র “সুপারম্যান” টাইপের বাইরে হওয়াই, দর্শকদের জন্য ছিল বিশেষ চমক। সবগুলো চরিত্রের ক্যারেকটার ডেভেলপমেন্ট, সিরিজের গল্প বলার ধরণ, সময় ; সবই ওয়াল্টার হোয়াইটের বানানো মেথের মতো ৯৯% নিখুঁত। ওই তুলনায় গেইম অফ থ্রোন্সের প্লটে খালি খাঁদা আর খাঁদা। চলেন একটু দেখি কি আর কি কি খাঁদা আছেঃ-
১. চুইংগাম নাকি ক্যান্ডি?
সব টেলিভিশান সিরিজ এক সময় গিয়ে শুধু পর্বের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য চুইংগামের মত পাবলিকের মেজাজ চাবাইতে থাকে। ব্রেকিং ব্যাড একদম তার উলটো। ক্যান্ডি যেরকম মুখে দিয়ে আরাম করে খেতে থাকেন, ঐভাবে ব্রেকিং ব্যাড স্টার্ট করে আরাম করে দেখতে থাকবেন। কোন জোরাজোরি নাই।
২. সিরিজ নাকি মেজবান?
হিসাব মতে ব্রেকিং ব্যাডের প্রধান চরিত্র সংখ্যা ১৫+ এবং গেইম অফ থ্রোন্সের প্রধান চরিত্র সংখ্যা ৪৫+। ঐখানেই শেষ নয়, তারপর আছে মনে রাখার জন্য একাধিক হাউসের নাম, সব চরিত্রের চোদ্দ গুষ্টির নাম, এরপর ওই চোদ্দ গুষ্টির কার সাথে বিয়ে হইছে আর ওদের বাড়ি কোন পাহাড়ের চূড়ায়, আরও কতো কি।
via GIPHY
৩. অন্য যেকোনো মিষ্টি নাকি জিলাপি?
ব্রেকিং ব্যাডের ঘটনা একদম সরল। “ওয়াল্টার স্কুলে রসায়ন পড়ায়। ওয়াল্টারের ক্যান্সার ধরা পরে। ওয়াল্টার গরিব, তাই ওয়াল্টার মেথ বানানো শুরু করে। জেসসি সেই মেথ বিক্রি করা শুরু করে।“ – এটা নিয়েই পুরা সিরিজ, হাজারটা ফ্ল্যাশব্যাক নাই। অন্যদিকে গেইম অফ থ্রোন্সের ফ্ল্যাশব্যাকে একজন যুদ্ধ ঘোষণা করে কারণ সে ভাবে তার প্রিয়তমাকে ভিলেন উঠিয়ে নিয়ে গেছে। এরপর সিরিজের শেষে আরেক ফ্ল্যাশব্যাকে দেখায় যে প্রিয়তমার প্রিয়তম ভিলেনই। ওমা, কি সুন্দর তারা বিয়ে করছে। যে যুক্তির উপর দাঁড় করে সিরিজ শুরু হয়েছে, ঐইটাই নাই আর।
via GIPHY
৪. ফুটবল নাকি গলফ?
সবসময় যে কোন ফুটবল ম্যাচের শেষ পাঁচ মিনিটে দেখা যায় কিভাবে জানি সবাই হাওয়াই উড়ে সোফা থেকে উঠে টেলিভিশান পর্দার একদম কাছে চলে যায় কিন্তু নিজে টেরই পায় না, এই একিরকমের উত্তেজনা কাজ করে ব্রেকিং ব্যাডের প্রতিটা পর্বে। গেম অফ থ্রোন্সে অনেক মজার কিছু ঘটনা থাকলেও, এই একি অ্যাড্রেনালিনে রাশ পাওয়া সম্ভব হয় না।
৫. জাতি মানে
দুটো সিরিজই ড্রামা ধারার হলেও তফাৎ অনেক। ব্রেকিং ব্যাডের প্লটের সাথে বাস্তব জীবনের অনেক মিল আছে। গেম অফ থ্রোন্সের মত আপনার কারো উপর মেজাজ খারাপ হলে তার সামনে “ড্রাকারিছ” বলে চিল্লায় উঠলে কোন লাভ হবে না, উল্টা নিজে মার খেয়ে চ্যাংদোলা হয়ে পড়ে থাকবেন।
৬. কলি থেকে ফুল নাকি ফুল থেকে কলি?
ব্রেকিং ব্যাডের প্রতিটা চরিত্রের ক্যারেকটার ডেভেলপমেন্ট অসাধারণ। ওয়াল্টার হোয়াইট যখন পুরা সিরিজ ধরে “ব্রেকিং ব্যাড” করছিল, জেসসি তখন “ব্রেকিং গুড” করছিল। আর গেম অফ থ্রোন্সে যেকোন চরিত্র পাবলিকের কাছে ভাল লাগে জর্জ আর. আর. মারটিন তাকে পটল ক্ষেতে ছেড়ে দিয়ে, লাগায় দেয় তাকে পটল তুলার জন্য।
৭. শেষ বাঁশি?
ব্রেকিং ব্যাডের সিরিজ ফিনালে ছিল চমকে ভরপুর। সবাই যখন ভেবেছিলো যে ওয়াল্টার হোয়াইটের মায়া, দরদ সব ওর চুলের মতো উড়ে গেছে তখনই সে একটা মেশিন গান নিয়ে জেসসিকে বাঁচাতে যায়। আর গেম অফ থ্রোন্সের ফিনালে আমরা অলরেডি জানি।